বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ১২:০২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন শুক্রবার ভারতরত্ন বাবা সাহেব ডক্টর বি. আর আম্বেদকরের ১৩৩ তম জন্ম দিবস পালিত হলো আজ হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী বিদেশ থেকে ফিরে গ্রেপ্তার, ২ দিনের রিমান্ডে কাচ্চি ভাইয়ের মালিক কামরাঙ্গীরচর থেকে কাউকে উচ্ছেদ করা হবে না। ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনের (মেয়র) নিট পরীক্ষা দিতে এসে, স্কুলে সাপের ছোবল পরীক্ষার্থীকে, জেলা জুড়ে চাঞ্চল্য তমলুকে শিক্ষকদের অনশন মঞ্চে , হামলার অভিযোগে ধিক্কার মিছিল ভালুকায় পথচারীদের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতরণ দেশের অন্যতম বৃহত্তম ও আধুনিক বৃদ্ধাশ্রম ‘হেনরী ভুবন’ উদ্বোধন হলো ভালুকায় মে দিবস উপলক্ষে মটরযানর‌্যালী কর্মচারী শ্রমিক ইউনিয়নের

আমি সরকারি গাছ বিক্রি করেছি, আপনারা যা পারেন করেন -ইউপি সদস্য রফিক 

 

 

সোহেল খান দূর্জয় নেত্রকোনা প্রতিনিধি : নিউজ দৈনিক ঢাকার কন্ঠ

 

নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার সাহতা ইউনিয়নের রামপুর দশাল গ্রামে সাহতা ফেরিঘাট টু বারহাট্টা সরকারি রাস্তার পাশ থেকে ৭টি মেহগনি,আকাশি গাছ কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন স্বল্পদশাল গ্রামের বাসিন্দা দুলাল মিয়ার ছেলে স্হানীয় ইউপি সদস্য ও বিএনপির নেতা রফিক। বারহাট্টা গোপালপুর বাজার সংলগ্ন পাড়া গড়মা গ্রামের কালাচান বেপারীর মিলে কাঠ ব‍্যবসায়ী কালাচানের কাছে প্রায় (পাচঁ লাখ) টাকায় গাছগুলো বিক্রি করা হয়।

 

ইতোমধ্যে শ্রমিক দিয়ে সাতটি গাছ কেটে মিলে নিয়ে গেছেন কাঠ ব্যবসায়ী।সরকারি বন বিভাগের গাছ বিক্রির কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম রফিক সাংবাদিকদের বলেন, আমি সরকারি গাছ বিক্রি করেছি। আপনারা যা পারেন করেন, আমার বিরুদ্ধে লেখেন, সমস্যা নাই। সরকারি বন বিভাগের গাছ বিক্রির বিষয়ে বুধবার (২৫ মে) বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাজহারুল ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রামপুর দশাল গ্রামের বাসিন্দা আওয়ামীলীগ সমর্থনকারী মদীনা আক্তার।

মুবিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রাম হবে শহর এই প্রকল্প হাতে নিয়ে দূর্বার গতিতে কাজ করে যাচ্ছেন কিন্তু ইউপি সদস্য রফিকদের মতো কিছু লোকজনের জন্যে তা ব‍্যঘাত ঘটছে। আমরা।পাচঁ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার রফিক কাউকে না জানিয়ে তার ক্ষমতার বলে সরকারি বন বিভাগের ৭টি মেহগনি ও আকাশি গাছ গড়মার কাঠ ব্যবসায়ী কালাচানের মিলে নিয়ে প্রায় পাচঁ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। গত সোমবার সকালে রফিক মেম্বার গাছ কাটার শ্রমিক নিয়ে এসে গাছ কাটা শুরু করেন। আমরা স্হানীয় বাসিন্দারা গাছ কাটতে বাঁধা দিলে রফিক মেম্বার বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেন। সোমবার দিনভর তারা ৭টি গাছ কেটে ফেলেন। আমরা বিষয়টি ইউএনও স্যারকে ফোনে জানাই।

এবং রফিক মেম্বারের বিরুদ্ধে যাতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয় সেজন্য আমরা ইউএনও স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। রামপুর দশাল গ্রামের বাসিন্দা ফরিদা বেগম বলেন, গত সোমবার রফিক মেম্বার এসে আমাদের বলেন যে, আমি উপর থেকে গাছ কাটার অর্ডার এনেছি। এরপর শ্রমিকরা গাছ কাটা শুরু করেন। আমরা বাঁধা দিলে রফিক মেম্বার আমাদের গালিগালাজ করেন।কাঠ ব্যবসায়ী কালাচান বলেন, তিনদিন আগে রফিক মেম্বার আমার কাছে এসে বলেন যে তিনি উপর থেকে এই ৭টি মেহগনি ও আকাশি গাছ বিক্রি করার অর্ডার এনেছেন। আমি গাছ কিনতে আগ্রহী কি না তিনি আমার কাছে জিজ্ঞেস করেন। আমি অর্ডারের কাগজ দেখতে চাইলে মেম্বার বলেন কাগজপত্র সব ঠিক আছে, কোনো সমস্যা নেই। মেম্বারের কথায় বিশ্বাস করে আমি গাছ কিনতে রাজি হই। এরপর গাছ দেখে তাকে নগদ কিছু টাকা দেই।

 

বুধবার (২৫ মে) সকালে এই এলাকার স্হানীয় বাসিন্দা মদিনা আক্তার নামে আওয়ামীলীগের এক কর্মী এই অভিযোগ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর, উপজেলার ২নং সাহতা ইউনিয়নের রামপুর দশাল গ্রামের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম রফিকের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে এ গাছ কাটার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় আরো কিছু গন‍্যমান‍্য ব‍্যক্তি।

 

স্থানীয়রা জানান, রামপুর দশাল গ্ৰামে সরকারি সড়কের গাছ কেটে করে বিক্রি করেছেন ইউপি সদস্য ও বিএনপির নেতা রফিকুল ইসলাম রফিক। তিনি তার ক্ষমতার বলে বন বিভাগকে না জানিয়ে ও উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি না নিয়ে গাছগুলো কেটে বিক্রি করে দেন।অভিযুক্ত ইউপি সদস্য রফিক বলেন, গাছগুলো ঝড়ে ফেলে দিয়েছে তাই রাস্তা পরিস্কার করে জনগণের চলাচলের ব‍্যবস্হা করেছি মাত্র আমি, কিন্তু গাছ গুলো আমি বিক্রি করিনি।সড়কের পাশে সরকারি গাছ অনুমতি ছাড়া কাটা যায় কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি কোনো গাছ বিক্রি করিনি একটি কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা রটনা করছে। এতে আমার কোনো সমস্যা নেই।

 

বারহাট্টা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাইনুল হক কাসেম বলেন, সড়কের পাশে সরকারি গাছ কাটার বিষয়ে ইতিপূর্বে আমার নিজস্ব ফেসবুক আইডির মাধ্যমে রাস্তার পাশে যে কোন ছোট বড় গাছ না কাটার জন্য সতর্ক বার্তা দিয়েছি। কিন্তু সাহতা ইউপি সদস্য ও বিএনপির নেতা রফিক আমাদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি না নিয়েই রাস্তায় ঝড়ে পরে যাওয়া সরকারি গাছ কেটে ফেলেছে আমি শুনেছি, এ বিষয়ে আরো ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

নেত্রকোনা বন বিভাগের ফরেস্ট অফিসার রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন,বন বিভাগের কোনো গাছ যদি কেউ বন বিভাগের অনুমতি ছাড়া কর্তন করে বন কতৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব‍্যবস্হা গ্রহণ করতে পারবে বলে বন বিভাগের নীতিমালায় তা স্পষ্ট করে লেখা আছে। বন বিভাগের বিধিমালায় বলা আছে ব্যক্তি মালিকানাধীন বা সরকারি জমি থেকে গাছ কাটার আগে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হয়। এরপর তদন্ত করে গাছ কাটার যৌক্তিকতা পাওয়া গেলে গাছের দরদাম নির্ধারণ ও পরবর্তী সময়ে আরও গাছ লাগানোর শর্তে গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হয়। এ প্রক্রিয়া বন বিভাগের মাধ্যমে করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, সাহতা ইউনিয়নের রামপুর দশাল গ্রামে সরকারি রাস্তা থেকে মেহগনি ও আকাশী গাছ বিক্রির বিষয়টি আমি জেনেছি। এবং যে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে আমার কাছে অভিযোগ করা হয়েছে তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। এবং বন বিভাগের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় গাছগুলো বিক্রি করে টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হবে। একইসঙ্গে এই গাছ বিক্রি ও কাটার সঙ্গে যে ইউপি সদস্য জড়িত তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ কে এম রুহুল আমিন বলেন, এই গাছ কাটার বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে বিষয়টি আমি ক্ষতিয়ে দেখছি। সামাজিক বনায়নের কোনো গাছ বন বিভাগের অনুমতি ছাড়া কেউ কাটতে পারবে না। এটা বন বিভাগের নীতিমালায় উল্লেখ করা আছে। যদি কেউ বন বিভাগের অনুমতি ছাড়া সামাজিক বনায়নের কোনো গাছ কর্তন করে তাহলে বন বিভাগ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব‍্যবস্হা গ্রহণ করবে।

 

২৭.০৫.২০২২ ইং

Please Share This Post in Your Social Media

দৈনিক ঢাকার কন্ঠ
© All rights reserved © 2012 ThemesBazar.Com
Design & Developed BY Hostitbd.Com